http://minafarah.com/?p=2041
প্রবীর সিকদার ও ব্যাঙের ছাতা
August 27, 2015 in Article & Essays, Bangla Blog
1
আমি ঝি মেরে বউ শিক্ষা দেবো। কালজয়ী উপন্যাস 'অ্যানা কারেনিনার' লেখক লিও টলস্টয়কে সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ দেয়ার জন্য মনোনয়ন করলে, লেখক তার কিছু বন্ধুকে দিয়ে গোপনে নোবেল কমিটিকে চিঠি লেখালেন যেন পুরস্কারটি তাকে না দেয়া হয়। নেপথ্যের কারণ, লেখক মনে করেছিলেন পুরস্কার পেলে মন লোভী হয়ে উঠবে। এতে সাহিত্যকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নামের সাথে নোবেল লরিয়েট নেই, কিন্তু মৃত্যুর ১০৫
বছর পরেও সাহিত্যে যারা রাজত্ব করেছেন, টলস্টয় প্রথম ১০ জনের একজন। প্রবীর সিকদার আমার চোখে শুধুই একজন প্রবীর সিকদার নন বরং দুর্নীতির গ্রহে সদ্য আবিষ্কৃত একটি নক্ষত্র।
বন্ধুবর এখলাস উদ্দিনের মাধ্যমে জনকণ্ঠে তার সাথে দেখা হলে 'সেই রাজাকার' বইটি পাই। এখানে আমার শহরে ফাঁসি হয়ে যাওয়া ব্যক্তি সম্পর্কে যা লিখেছেন, কৌতূহলের সাথে পড়েছি। এখন আমার সন্দেহ, বইটি নিছক কাউকে খুশি করার জন্য লেখা। অনুকম্পা পাওয়ার জন্য লেখা। নিঃসন্দেহে তিনি গবেষক নন। তাকে গ্রেফতারের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলো, সরকারের কেলেঙ্কারি নিয়ে আর কী লিখব! বরং
সিকদারের ওয়েবসাইটে ঢোকার পর দু'চোখ ছানাবড়া। কিছুক্ষণ পড়ার পর মাথায় যন্ত্রণা, হৃৎপিণ্ডে লাফালাফি, নার্ভাস সিস্টেম উত্তেজিত। একজন অন্ধকারের বহুমুখী চরিত্রের হালনাগাদ করতে চাইছি। ভদ্রলোক আমার চোখে একটি বিশেষ দলের রাজনৈতিক নর্দমায় যেখানে-সেখানে গজিয়ে ওঠা ব্যাঙের ছাতার একজন। এ ধরনের চরিত্রের মানুষদের জন্যই এ ধরনের দল প্রয়োজন। দুর্নীতির আঁস্তাকুড়ে এরা বেড়ে ওঠে
অনন্তকাল।
ওয়েবসাইটটি দেখে মনে হওয়ার কোনোই কারণ নেই, এসব ব্যাঙের ছাতার আসলেই পিতৃপরিচয় আছে। একজন মানুষকে নিজের বাবা বানাতে একটি দলের এই পর্যায়ের নৈতিক স্খলনের ক্যানভাসে একটি বিমূর্ত চিত্র- প্রবীর সিকদার। আমরা জানি, আদম-ইভের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত পিতা-মাতা ছাড়া সন্তানের জন্ম হয় না। কিন্তু স্তাবকেরা আমাদের বিশ্বাসের দুয়ারে বারবার আঘাত করেছে। তারা বলতে চেয়েছে, আদম-ইভ সত্য নয়।
অন্যের পিতা-মাতাকে পিতা-মাতা, অন্যের ভগ্নি-ভ্রাতাকে নিজের ভগ্নি-ভ্রাতা বানাতে হবে। বানিয়ে শুধু নিজের মধ্যেই রাখা চলবে না, এসব প্রচারে চীন যেতে হবে। নিজেকে টেনে নিতে হবে নৈতিক স্খলনের চূড়ায়। মনে যাই থাকুক, অসীম ক্ষমতাধরদের কৃপা আকর্ষণে বই লিখতে হবে, পত্রিকা বানাতে হবে, ওয়েবসাইট খুলতে হবে, ঘরের দেয়াল ভরে ফেলতে হবে কাল্পনিক বাবা-মায়ের ছবি দিয়ে। নিজের বাবা-মাকে বিসর্জন
দিয়ে অন্যের বাবা-মায়ের ছবিতে জন্ম এবং মৃত্যুদিবসে ফুল দিয়ে পূজা করতে হবে। ওয়েবসাইটে এক বিশেষ দিনের অনুভূতির কথা পড়ে মনে হয়েছে, লোকটি একেবারেই পিতৃপরিচয় শূন্য। সে-ও দলের স্তাবকদের মতো জাতিকে পিতৃপরিচয় ভুলে যাওয়ার শিক্ষা দিচ্ছে! লিখেছেন, '১৫ আগস্টে বাবার ছবিতে একটি ফুল পায়ে ছুইয়ে প্রণাম করলাম।' না। তিনি জন্মদাতা পিতার কথা লেখেননি। সারা দিন নাকি মন খারাপ করে
বারান্দায় বসে ছিলেন। মানে?
প্রবীর সিকদারদের অধঃপতন আমাকে যত বিস্মিত করে তার চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন করে। আত্মপরিচয় বিকিয়ে দিয়ে কোনো জাতি সভ্য হতে পারে না। আত্মপরিচয়কে অস্বীকার করে কোনো ব্যক্তিই আত্মবিশ্বাসী মানুষরূপে বিকশিত হয় না। যে দিন নাগরিকত্ব নিলাম, মার্কিন বিচারক সবার উদ্দেশে বললেন, 'আত্মপরিচয়কে কখনো তোমরা ভুলে যেও না। সব সময় মনে রেখো, তোমরা কোত্থেকে এসেছ।' এসব প্রবীর সিকদার জাতিকে
শেখাচ্ছেন, কিভাবে আত্মপরিচয়কে হত্যা করতে হয়। কিভাবে অন্যের আঁস্তাকুড়ের পোকামাকড় হতে হয়। কিভাবে বংশ পরিচয়কে কোরবানি দিতে হয়। বুদ্ধিজগতে দুর্ভিক্ষের মূর্ত প্রতীক সিকদারেরা জাতিকে মেধাহীন করার জন্য যথেষ্ট উদাহরণ। বই লিখেছেন, 'আমার বোন শেখ হাসিনা'। মানে? বইটি লেখার মাধ্যমে নৈতিক স্খলনের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ওয়েবসাইটজুড়েই অন্যের পিতার জন্য কান্নাকাটি এবং আদর্শের
পিতৃপূজা একজন মেরুদণ্ডহীন মানুষের কথা বলছে। অনলাইন পত্রিকাজুড়ে এক ব্যক্তি, এক পরিবার, এক আদর্শের প্রচার যেন কারো দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নির্লজ্জ কান্নাকাটি। এদের জন্য আমার সত্যিই করুণা হয়। জগৎশেঠ চরিত্রের এরা, সময়মতো জাদুঘরে পাঠানো হবে। প্রবীর সিকদারেরা কারো বন-জঙ্গলের বেড়ায় জড়িয়ে পরগাছার মতো বেঁচে থাকতে চায়। অন্যের পরিচয়ে পরিচিত হতে চায়। নিজস্ব চরিত্র থাকলে,
কর্মকাণ্ড দেখার পর, সেটা মনে করিনি। এ ধরনের উদাহরণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিপজ্জনক বলে মনে করি।
পঙ্গু লোকটাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে স্খলনের আরেকটি মহাকাব্যের সূচনা হলো। কী আছে এই মহাকাব্যে! আসুন পরীক্ষা করি, নব্য বাল্মিকী মুনি। এখানে যা পাওয়া গেছে তা এই রকম। ব্রিটিশের ডিভাইড অ্যান্ড রুল নয়, নাৎসিবাহিনীর গণহত্যা নয়, পলপটের বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞ নয়, বিশেষ দলের ভূমিকা এখন তার চেয়ে বেশি। হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খলনায়কেরাও এদের হাতে নিরাপদ নয়। বিশেষ ব্যক্তির
বেয়াই নাকি একজন হিন্দুকে তার বিশ কোটি টাকার সম্পত্তি জোর করে বিক্রিতে বাধ্য করেছিল বলে অভিযোগ এই সাংবাদিকের। কে এই বেয়াই? আনন্দবাজার পত্রিকা বেয়াইয়ের পরিচয় তুলে ধরেছে। সংখ্যালঘুদের সম্পত্তির দিকে দলগুলোর প্রসারিত হাত নিয়ে কতটুকু আলোচনা হয়? প্রবীর সিকদারকে এ জন্য ধন্যবাদ দিতেই পারি। তিনি আদর্শের সাপের ঝাঁপি খুলে দিলেন। এই দেশে পরকীয়া করতে গেলেও ব্যক্তিবিশেষে
সমাজ, মিডিয়া এবং পদ-পদবির ভয় থাকে। কিন্তু সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করতে বিশেষ ব্যক্তির পরিচয়ই যথেষ্ট। বিশেষ ব্যক্তির নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিলেই ওই সম্পত্তি তার। এভাবেই তো ৬৯ বছরে প্রায় আড়াই লাখ একর সম্পত্তি বেদখল হয়েছে। ৪২ শতাংশ সংখ্যালঘু থেকে বর্তমানে ৮ শতাংশও কি-না সন্দেহ। গণতন্ত্রের নামে এ ধরনের কুদৃষ্টান্ত পৃথিবীর কোথাও নেই। দলের পোস্টার হাতে রাত
পোহালেই কিছু বিষাক্ত সাপ কর্মযজ্ঞে নামে। যা পায় দখল করে। এমনকি মন্দির-মসজিদ-গির্জাও রক্ষা পায় না। প্রবীর সিকদার শুধু হিন্দু সম্পত্তি দখলের কথা বলেছেন, বলেননি ৩২ নম্বরের পাবলিক রাস্তাটি বেদখল হওয়ার কথা। বলেননি, আদর্শের নামে ডোবা-নালা, মন্দির-সমজিদ দখলের কথা। তার মনমানসিকতায় একনায়কত্ববাদ। প্লুরালিজম এদের রক্তে নেই। থাকলে, দেশজুড়ে ব্যক্তির নামে এই যে মাঠ-ময়দান
দখল, এসব নৈরাজ্যও স্থান পেত প্রবীরের পত্রিকায়। এখানেই তাদের স্খলনের প্রমাণ। না। আমি ৩২ নম্বরের রাস্তা দিয়ে আর ঢুকতে পারিনি। পাবলিকের জন্য লম্বা রাস্তাটির এমাথায়-ওমাথায় বিশাল লোহার মাস্তুলের মতো বস্তু দিয়ে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা হয়েছে। কোনো সুস্থ মানুষই এর কোনো ব্যাখ্যা করতে পারবে না। আমিও পারব না। ৩২ নম্বর বন্ধ দেখে আমি যেন এই দফায় দলীয় স্খলনের নারকীয় দৃশ্যই
দেখলাম। প্রথম বাকশালেও পাবলিকের রাস্তা দখল করার প্রমাণ পাইনি। এখানে এসে বলতে হয়, ওদের মতো মানুষগুলোর উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয়। সুবিধাবাদী ওরা, গাছের খায়, তলেরও কুড়ায়। যে দিকে স্রোত সে দিকেই দৌড়ায়। অন্যথায় তার অভিযোগের 'চরিত্র' এরকম হওয়ার কথা নয়।
গ্রেফতারের আগে রাজাকার লুনা মুসার ভয়ঙ্কর চিত্র তুলে ধরেছেন এই সাংবাদিক। প্রাণভয়ে শঙ্কিত হয়ে জিডি করতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি। বরং ফেসবুকে লেখার সাথে সাথে হিন্দুদের শত্র" আরেক হিন্দু, দলের দৃষ্টি আকর্ষণের সুড়সুড়িতে, পুলিশে জিডি করে বসল। হিন্দুদের শত্র" হিন্দুরা নিয়ে আগেও লিখেছি। লিখে যথেষ্ট শাস্তি ভোগ করছি। বিষয়টি নিয়ে মহাকাব্য লেখারও চিন্তা করছি। অতঃপর হাতকড়া
পরিয়ে পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিলো। পুলিশের এহেন স্খলনের দৃশ্য বারবার দেখেছে বিশ্ববাসী। এ দিকে আনন্দবাজার থেকে আলজাজিরা… ছিঃ ছিঃ রব উঠলে আদালতে তার জামিনের বিরুদ্ধে চুপ রইল সরকারপক্ষ। আইনমন্ত্রী বললেন, তাকে রিমান্ড দিয়ে নাকি ভুল করেছে। যেন নিজের গালেই চড় মারল বিচার বিভাগ। এই দৃষ্টান্ত যেকোনো আদালতে ন্যায়বিচার প্রার্থীদের জন্য ভয়ানক। হাইকমান্ডের নির্দেশে জামিন
হলে গলায় ফুলের মালায় বীরের বেশে ফিরতে দেখেছি। তিরস্কার না করে বরং রাজাকার এবং হিন্দু সম্পত্তি দখলদার আত্মীয়দের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি কিছু পরজীবী সাংবাদিক। মুক্তি পেয়েই ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভোল পরিবর্তন? চরিত্রহীনদের চরিত্র বলে কথা। নিজের মুরোদ না থাকলে যা হয়, অন্যের দয়ার ওপর নির্ভরশীল। এর চেয়ে দুরারোগ্য ব্যাধি পৃথিবীতে নেই। কোনো ওষুধেই এ রোগ সারে না। সরকারকে
ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, তার বোনকে যেন কেউ ভুল না বোঝে। বোনকে ভুল বুঝলে গণতন্ত্রের ক্ষতি হবে। ভুল না বোঝে? আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, কোন ধরনের গণতন্ত্রের কথা বলতে চাইছেন গণতন্ত্রের এই পীর সাহেব! নাকি আইনহীনতার এহেন দৃষ্টান্তকেই গণতন্ত্র বলে তালিয়া বাজাতে বলছেন! পরজীবী ভদ্রলোকের দ্বৈতনীতি তার স্ট্যাটাসেই পরিষ্কার। ইঙ্গিতে যা বোঝালেন, ধনকুবের রাজাকার মুসা এবং পকেট
ভর্তি মন্ত্রণালয়ের মালিক দোর্দণ্ড প্রতাপশালী বেয়াইয়েরা একটি দেশের সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে। পলিসি মানতে বাধ্য করে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ব্রিফকেসে ঢুকিয়ে রাখে। সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করলেও বেয়াইরা বিচারের ঊর্ধ্বে। অর্থাৎ রাজাকার হলে ক্ষতি নেই যখন তারা দলের। এটাই তো বলতে চেয়েছেন, প্রবীরদা, নয় কি? না, আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা
হবে না। কারণ জুডিসপ্র"ডেন্স আমার পক্ষে। এখানে রাষ্ট্র নিজেই দেখাল, প্রবীরের জন্য নিয়ম কিভাবে ভঙ্গ করা হলো। প্রবীরের ক্ষেত্রে কেন অনিয়মই নিয়ম এবং নিয়মই অনিয়ম। ভদ্রলোক যদি ২০ দলীয় জোটের হতেন, জুটত সাংবাদিক শওকত মাহমুদের ভাগ্য। হ্যাঁ, আমি বিরোধী দল নির্যাতনের কথাই বলছি। এই দেশে বিরোধী দলের জন্য আইন বানায় সরকার আর নিজের আদর্শের হলে আইন বানায় দল। হ্যাঁ, নিয়ম নয়ছয় করে
প্রবীরের মুক্তি এবং শওকত মাহমুদের রিমান্ড, আমার অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণ করেছে। অর্থাৎ এই দেশে ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ফুরিয়েছে। শওকত মাহমুদ এবং প্রবীরকে এক দিনে গ্রেফতার করা হলেও দু'জনের জন্য আইন দু'রকম হওয়ায় জুডিশিয়াল কিলিং কিংবা ক্রসফায়ারের তাণ্ডব নিয়ে লেখার জন্য মৌলিক চিন্তার মানুষ হওয়ার সাহস ওদের নেই। প্রবীর সিকদারের জামিনই প্রমাণ করল, ডালমে কুচ কালা হায়।
বিষয়টি কী দাঁড়াল? আদালত আদালতের জায়গায় নেই। ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে বিচারকেরা একের পর এক মিসট্রায়ালের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেই চলেছেন। আরেকজন বলেছেন, তিনি না থাকলে নাকি সাকার রায়ই হতো না। এটাই আইনহীনতার যথেষ্ট প্রমাণ এবং প্রবীর সিকদারের ক্ষেত্রে যার ব্যত্যয় ঘটেনি, ঘটেছে একমাত্র শওকত মাহমুদের বেলায়। আরো যা দাঁড়াল, ট্রাইব্যুনালের নামে বিরোধী দলের মেরুদণ্ড ভাঙাই
লক্ষ্য। যা বললেন, বড় বড় রাজাকার সরকারের আত্মীয়। বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে, রাজাকারেরাও সুরক্ষিত। বুঝলাম, সরকার রাজাকারদের বিচার চায় না, চায় বিরোধী দলকে পঙ্গু করে দিতে। রাজাকার বংশের ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে বিশেষ ব্যক্তির কন্যার। কঠিন সত্য অস্বীকারের জায়গা ফুরিয়েছে। প্রবীর সিকদারের ঘটনা যেন শাপেবর। এর মাধ্যমে বিশ্ব জানতে পারল, প্রভাবশালী মন্ত্রী একজন রাজাকারই শুধু
নয়, অসম্ভব ক্ষমতাধর ব্যক্তির বেয়াইও। আরো জানতে পারল, ব্যক্তির আত্মীয়দের জন্য আইন প্রয়োগ করা যাবে না। জানল, জুডিশিয়াল কিলিং কেন কল্পকাহিনী নয়, আদালত কিভাবে চলছে বিশেষ ব্যক্তির ইশারায়। প্রবীর সিকদারের জন্য না হলে আনন্দবাজার পত্রিকা কখনোই এই ভাষায় লিখত না।
এসব ব্যাঙের ছাতার জন্যই এ ধরনের দল প্রয়োজন। অন্যথায় ব্যাঙের ছাতারা খাবে কী, পরবে কী! তাদের তো মুরোদ নেই। প্রবীর সিকদারের ফেসবুক খুলে বুঝতে পারলাম, কিভাবে উচ্ছিষ্টের নির্যাস খেয়ে বেঁচে থাকে পরজীবীরা। দেশজুড়েই কোটি কোটি প্রবীর সিকদার এখন আর কল্পকাহিনী নয়। মানুষের ন্যূনতম বিবেক, উন্নত মানসিকতা, যুক্তির জায়গাগুলোর প্রতিটি ইঞ্চি ধরে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে
একটি বিশেষ দলের হাইকমান্ড। অন্য দিকে যাদের কোনো দলীয় অনুকম্পার প্রয়োজন হয় না, এই যেমন আমি। যে দেশে থাকি, আইন প্রত্যেকের জন্য সমান। বিপুলসংখ্যক বাংলদেশীও এই দেশের আইনের শাসনের সুবিধা ভোগ করছে। শামীম ওসমান কিংবা নাসিমদের মতো আইনপ্রণেতা এ দেশে থাকলে বহু আগেই আদালতে হোয়াইট হয়ে যেত। মার্কিনিরা এদের রাজনীতির মাঠ থেকে নিরাপদ দূরত্বে জায়গামতো রেখে দিত। শুধু লেখার
স্বার্থে আজ যে কথাটি বলতে বাধ্য হচ্ছি, আইন কিংবা অর্থের জন্য আমাদের কোনো প্রবীর সিকদার হতে হয় না। ২০১৫ সালে কয়েকটি বড় মাপের ব্যবসা করেছি। ব্যবসা সফল করার জন্য কাউকে তোষামোদ করতে হয়নি। বইও লিখতে হয়নি, পুলিশকে ঘুষ দিতে হয়নি। আমি আমার নিজের ভাগ্যের জন্য নিজের দিকেই তাকিয়ে থাকি। সমস্যা হলে, আদালতের দরজা খোলা। দুই বছরের মধ্যে রায় হয়ে যায়। শুধু আমি নই, আমার মতো কোটি কোটি
মার্কিনিও একই সুফল ভোগ করছে। বলছি, আইনের শাসনের কোনোই বিকল্প নেই। আমাদের দেশে যারাই ব্যতিক্রমের চিন্তা করে, তাদের বেলায় বারবারই বাকশালী মনোভাব অনিবার্য হয়ে ওঠে। অলৌকিক কিছু থাকলে, এসব প্রবীর সিকদার প্রতিষ্ঠানগুলোর হাত থেকে যেন জাতিকে দ্রুত মুক্তি দেন।
২
প্রবীর সিকদারের গ্রেফতার নিতান্তই দুঃখজনক। আমি তার মানবাধিকারকে সর্বোচ্চ সম্মান করি। ফেসবুকে আমার লেখাটি তার নজরে এসেছে। সুতরাং যে প্রশ্নটির জবাব তাকেই দিতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত হলে, বোনের ঘরে রাজাকারদের বন সত্ত্বেও এই আনুগত্যের ব্যাখ্যা কী! জোট সরকারের কথিত রাজাকারদের ঘটনার সঙ্গে এলজিআরডি মন্ত্রী এবং শেখ সেলিমের ঘটনার তফাৎ কী!
মানবতাবিরোধীদের বিচার চেয়ে তিনি জেলায় জেলায় ট্রাইব্যুনাল দাবি করেছেন। আমরাও চাই রাজাকারদের বিচার হোক। কিন্তু প্রবীর সিকদারের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, তিনি শুধু একাংশের বিচার চান। যার বনে রাজাকারদের বাসা, প্রাণের ভয়ে জিডি করতে গিয়েছিলেন, সেই স্তম্ভকেই আঁকড়ে ধরার কারণ কী! অথচ তারই অভিযোগ অনুযায়ী, বোনের সঙ্গে রাজাকারদের পারিবারিক সম্পর্কের পর দুই নেত্রীকে একই
পাল্লায় তোলার কথা। বলতেই পারি, খালেদা-নিজামীদের জোট আর বোনের সঙ্গে বেয়াই-মুসার পারিবারিক সম্পর্ক- এক। নিশ্চয়ই তিনি নতুন পিতার সঙ্গে ওআইসি সম্মেলনে এবং ঢাকায়, '৭৪ এবং '৭৫ সালে, '৭১-এর গণহত্যাকারীদের বুকে আগলে নেয়ার ঘটনাকে অস্বীকার করবেন না। প্রবীরদার মতো অন্ধ আওয়ামীপ্রেমীদের সমস্যা একটাই, জেগে জেগে ঘুমান।
BiharWatch, Journal of Justice, Jurisprudence and Law is an initiative of Indian Jurists Association (IJA), East India Research Council (EIRC) and MediaVigil. It focuses on consciousness of justice, legislations and judgements besides philosophy, science, ecocide, wars and economic crimes since 2007. It keeps an eye on poetry, aesthetics, research on unsound business, donations to parties, CSR funds, jails, death penalty, suicide, migrants, neighbors, big data, cyber space and totalitarianism.
Sunday, August 30, 2015
When Tolstoy refused Nobel Prize!আমি ঝি মেরে বউ শিক্ষা দেবো। কালজয়ী উপন্যাস ‘অ্যানা কারেনিনার’ লেখক লিও টলস্টয়কে সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ দেয়ার জন্য মনোনয়ন করলে, লেখক তার কিছু বন্ধুকে দিয়ে গোপনে নোবেল কমিটিকে চিঠি লেখালেন যেন পুরস্কারটি তাকে না দেয়া হয়। নেপথ্যের কারণ, লেখক মনে করেছিলেন পুরস্কার পেলে মন লোভী হয়ে উঠবে। এতে সাহিত্যকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নামের সাথে নোবেল লরিয়েট নেই, কিন্তু মৃত্যুর ১০৫ বছর পরেও সাহিত্যে যারা রাজত্ব করেছেন, টলস্টয় প্রথম ১০ জনের একজন। প্রবীর সিকদার আমার চোখে শুধুই একজন প্রবীর সিকদার নন বরং দুর্নীতির গ্রহে সদ্য আবিষ্কৃত একটি নক্ষত্র।
__._,_.___
Pl see my blogs;
Feel free -- and I request you -- to forward this newsletter to your lists and friends!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment