প্রাসঙ্গিক ভাবনা
দেশ মগের মুল্লুক হতে যাচ্ছে?
ড. মোঃ নূরুল আমিন : প্রাচীন বাংলায় এ দেশের মানুষের ওপর বহিরাগত মগ ও পর্তুগীজরা যে পাশবিক হামলা ও লুণ্ঠন চালিয়েছিল ইতিহাসের পাতায় তা এখনো জীবন্ত হয়ে আছে। পর্তুগীজ জলদস্যুদের সাথে মগ নামক বার্মীজ বৌদ্ধ ডাকাতরা হাত মিলিয়ে যখন বাংলায় ধর্ষণ, লুণ্ঠন, ডাকাতি ও হত্যার মতো জঘন্য অপরাধে লিপ্ত হয়, তখন সারা বাংলার কোটি কোটি মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। দেশে তখন আইনের শাসন ভেঙ্গে পড়ে এবং সরকারের কার্যকারিতা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। কার্যত সরকার মগ ও জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে। ইতিহাস থেকে যতদূর জানা যায়, প্রায় আড়াইশ বছর ধরে বাংলায় মগদের হামলা অব্যাহত ছিল। তৎকালীন পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকার অধিবাসীরা বারবার মগ হামলার শিকার হয়েছে। মোগল সুবাদার ইব্রাহীম খান ফতেহ্ জং অবশ্য তাদের পরাজিত করে চার হাজার মগ যুদ্ধ নৌকা দখল করেছিলেন। মগরা এতই দুর্দান্ত ছিল যে, হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, লুণ্ঠন প্রভৃতি ছাড়াও তারা এদেশের নারীদের সম্ভ্রম লুণ্ঠনেও ব্যাপকভাবে লিপ্ত ছিল। তারা ঢাকার একজন মোগল সেনাপতির স্ত্রীকেও পর্তুগীজদের সহায়তায় অপহরণ করে। খুলনার ইতিহাস প্রণেতা সতীশ চন্দ্র মিত্র মগ ফিরিঙ্গিদের অত্যাচারের পাশাপাশি বর্ণ হিন্দুদের অত্যাচার-নিগ্রহের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাঁর ইতিহাস গ্রন্থে তুলে ধরেছেন। তাদের সহযোগিতায় "মগ হামলার শিকার বাংলার গৃহস্থরা নিজেদের দুর্ভাগ্য অথবা অরক্ষিত অরাজক দেশের দোষে সমাজের পতিত ও অপবাদগ্রস্থ হইয়া থাকিত।" ক্রমাগত মগ হামলায় বহু জনপদ জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল। নদীর দুই ধারে সন্ধ্যাবাতি জ্বালানোর মত মানুষও ছিল না। তাদের নির্মম অত্যাচারে এদেশের অনেক মানুষ পৈতৃক ঘর গৃহস্থালী ফেলে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিত। মগ-পর্তুগীজদের অত্যাচার আইনের শাসনের অকার্যকারিতা ও সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এবং ক্ষেত্র বিশেষে শাসকদের পলায়নপরতা এই জনপদটিকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছিল। প্রকৃতপক্ষে স্বেচ্ছাচারিতা, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি এবং হত্যা-লুণ্ঠন, জবরদখল, চাঁদাবাজি, প্রভৃতি অরাজক অবস্থা বুঝানোর জন্যেই মগের মুল্লুক শব্দটি ব্যবহৃত হয়। ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে পর্তুগীজ ও মগ দস্যুরা মিলে বাংলাদেশে যে অবস্থা সৃষ্টি করেছিল তা হচ্ছে বর্ণনাতীত। তাদের অত্যাচারে চট্টগ্রাম থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত গোটা উপকূল জনশূন্য হয়ে পড়েছিল। এমনকি উপকূলীয় এলাকা থেকে ঢাকা পর্যন্ত নদনদীর দুই ধারের গ্রামগুলো মনুষ্য বসবাসের যোগ্য ছিল না। মগরা তিন-তিনবার ঢাকা আক্রমণ করে ব্যাপক লুণ্ঠন কাজ চালিয়েছিল। পর্যটক সোবাস্তিয়ান মানরিকের বিবরণ অনুযায়ী ১৬২৯ থেকে ১৬৩৫ সালের মধ্যে তারা বাংলাদেশ থেকে আঠারো হাজার মানুষ ধরে নিয়ে গিয়ে দিয়াঙ্গা ও আরাকানে বিক্রি করে দিয়েছিল। মোগল সুবাদার শায়েস্তা খাঁর আমলে মগদের পতন ঘটে। তাঁর অন্যতম কীর্তি হচ্ছে এই মগ ও ফিরিঙ্গি দস্যুদের কবল থেকে এদেশের মানুষদের রক্ষা করা। ১৬৬৪ সালে বাংলার শাসনভার হাতে নিয়েই তিনি প্রথম নজর দেন দস্যু দমনে। ১৬৬৫ সালে তিনি এদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন এবং ১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জয়ের মাধ্যমে তিনি এদের সমূলে বিনাশ করেন। বাংলায় দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা মগের মুল্লুকের অবসান ঘটে। তাঁর আমলে আইনের শাসন ফিরে আসায় সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও স্বস্তি এবং নিরাপত্তা ফিরে এসেছিল। এ জন্য শায়েস্তা খাঁ এদেশের মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস : প্রায় সাড়ে তিনশ বছর পর বাংলাদেশে মগের মুল্লুক ফিরে এসেছে বলে মনে হয়। তবে, ভিন্ন অবয়ব ও আঙ্গিকে এর সূচনা ঘটেছে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নামক একটি রাজনৈতিক দলের শাসন ক্ষমতা গ্রহণের সুযোগ নিয়ে। দলটি ক্ষমতায় আসার পর যে হারে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর অত্যাচার নিপীড়নের পাশাপাশি সরকারি- বেসরকারি সম্পত্তি লুণ্ঠন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জবরদখল, হত্যা, গুম, ব্যাংক ও অর্থ প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট, শেয়ার বাজারে মূলধন লোপাট, মেগা প্রকল্পের নামে অর্থ আত্মসাৎ, বিচার বিভাগীয় ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া ও প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অমানবিকভাবে হত্যা এবং হত্যাকা- ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কাজে এলিট ফোর্স র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বেআইনী ব্যবহার এবং তার অভিব্যক্তি হিসেবে যে হারে সমাজে আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে তা মগ-পর্তুগীজদের অত্যাচারকেও হার মানায়।
দেশের এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে শাসক দলের কিছুসংখ্যক মন্ত্রী-এমপি-আমলা ছাড়া আর কারোরই জীবন-মান-সম্ভ্রম ও সম্পত্তির কোন নিরাপত্তা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। ষোড়শ শতাব্দীতে যখন মগ ও পর্তুগীজ দস্যুরা অত্যাচার কাজে তৎপর ছিল তখন সরকার ছিল নিষ্ক্রিয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভয়ে ভীত ও সন্ত্রস্ত। তখন সরকারের কোন দল বা অঙ্গ-সংগঠন ছিল না। সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীও মানুষের অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ লুট করার কোন অভিযোগ শোনা যেত না। কিন্তু আধুনিক মগের মুল্লুকের অবস্থা ভিন্ন ও আরও ভয়াবহ। এখন সরকারের যেমন দল আছে তেমনি এই দলের অর্ধশতাধিক উপদল বা অঙ্গ-সংগঠন রয়েছে। যাদের চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি ও নির্যাতনে সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে বলে দেশব্যাপী দীর্ঘকাল ধরে অভিযোগ চলে আসছে। এদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে থানায় জিডি নেয়া হয় না। পুলিশ প্রশাসন সহানুভূতি দেখায় না। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার কর্ণপাত করেন না এবং বিচারিক আদালতে তাৎক্ষণিক বা মধ্যমেয়াদে কোন বিচার পাওয়া যায় না। এই এক আজব দেশ। একদিকে চরম দারিদ্র্য, ভিক্ষার সামগ্রী সংগ্রহ করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ডজন ডজন মানুষ, নারী ও শিশু মৃত্যুবরণ করে। অন্যদিকে চাঁদাবাজি, লুটপাট, জবরদখল ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে মন্ত্রী-এমপি, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ লীগ পরিবারের সদস্যরা অর্থ বিত্তের পাহাড় গড়ে। এই কাজে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সরকার সমর্থক মেয়র-কাউন্সিলররাও শরিক হবার অভিযোগ উঠেছে। এদের অনেকেই বিদেশে বেনামি অর্থ পাচার করে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম বানায়। সরকারি ব্যাংকগুলোকে এরা প্রায় দেউলিয়া করে ছেড়েছে। তাদের ব্যাংক একাউন্টসমূহ শুধু স্ফীত হয়নি অনেকে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে নামে-বেনামে জায়গা সম্পত্তি, ফ্ল্যাট-বাড়ি ও সোনা-দানার বিপুল মজুদ গড়ে তুলেছে। সরকার দলীয় এমপি, মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্য, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ গোটা লীগ পরিবারের নেতাকর্মীদের ব্যাংক হিসাব যদি নিরপেক্ষ কোন তদন্ত দল দিয়ে পরীক্ষা করানো হয় তাহলে সম্ভবত তাদের মধ্যে এমন একজনও পাওয়া যাবে না যার একাউন্টে অবৈধ ও অজ্ঞাত উৎসের অর্থ নেই। এই অর্থ শোষিত জনগণের। মগরা মানুষকে শোষণ করেছে লুণ্ঠন করেছে সত্য কিন্তু তার ব্যাপকতা আধুনিক মগদের তুলনায় খুবই নগণ্য।
সারা দেশে এর ভূরি ভূরি নজির রয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর বর্তমান ক্ষমতাসীন দল দেশ শাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল এবং দলটির নেতাকর্মীরা একদিকে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর হত্যা, গুম, হামলা, মামলা ও নির্যাতনের স্টীম রোলার চালিয়ে ইতিহাসের এক জঘন্যতম অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। বিহারী, অনিবাসী ও প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং পারিবারিক শত্রুদের সম্পত্তি জবর দখল করে তারা অর্থ-বিত্তের পাহাড়ও সৃষ্টি করেছিল। অবাঙ্গালিদের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ প্রায় ৫৫ হাজার বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকারখানা জবর দখল করে তারা হঠাৎ করে শিল্পপতি বনে গিয়েছিল। এছাড়াও তারা গ্রামগঞ্জে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুভিটা ও জায়গাজমি ছাড়া করে পথের ভিখারী বানিয়েছিল। মজলুম জননেতা মরহুম মওলানা ভাসানীর ভাষায় তারা দেশকে তখন একটি লুটপাট সমিতিতে রূপান্তর করেছিল। প্রথমত আঁতাতের নির্বাচনে প্রতিবেশী দেশের বস্তা বস্তা টাকা ও পেশী শক্তি বলে এবং পরবর্তীকালে ভোটারবিহীন নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে বিনা ভোটে 'জয়লাভ' করে সরকার গঠন করে তারা নতুন নতুন কায়দায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি, দুর্নীতি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। এটা করতে গিয়ে তারা গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সার্বজনীন মানবাধিকার এবং ইনসাফকে গলা টিপে হত্যা করেছে। নির্লজ্জ দলীয়করণের কবলে পড়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি অঙ্গ এখন ক্ষতবিক্ষত। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দলীয় দাসত্বের শৃঙ্খলে শৃঙ্খলিত। ক্ষমতাসীন দলটির দ্বিতীয় মেয়াদের শাসনামলে তাদের অনেকটা সংযত দেখা গেলেও তৃতীয় ও চতুর্থ মেয়াদে এসে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে মনে হয়। তারা একসাথে সকল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলকে নির্মূলের অভিযানে নেমেছে এবং শতকরা নব্বই ভাগ মানুষের ঈমান, আকীদা ও বিশ্বাসের ওপর যারা আঘাত হানছে তাদের পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকা পালন করছে। ১৯৯৬-২০০০ মেয়াদে সারা দেশে নগণ্যসংখ্যক সন্ত্রাসী-গডফাদারের অপকর্ম তাদের জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়েছিল। কিন্তু, তা থেকে তারা কোন শিক্ষা গ্রহণ করেছেন বলে মনে হয় না। বর্তমানে শুধু জেলা-উপজেলা নয় সারা দেশের ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে সন্ত্রাসী গডফাদাররা তাদের অপতৎপরতা চালাচ্ছে এবং অভিযোগ উঠেছে যে, এই দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের তারা চাঁদাবাজি-দখলবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। কেউ কেউ বলে থাকেন যে, তাদের অবৈধ অর্থের একটি অংশ তারা উপরের দিকেও ব্যয় করে থাকেন।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরসমূহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দল ও তার অঙ্গ-সংগঠনসমূহের প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা ব্যক্তি ও সামষ্টিক মালিকানাধীন হাজার হাজার বাড়িঘর, প্লট, ফ্ল্যাট জবরদখল করে রেখেছে। তারা ভাড়াটিয়াদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তাড়িয়ে দিয়ে নিজেরাই ভাড়াটিয়া বসিয়ে এগুলো ভোগ দখল করছে। বেচারা মালিকরা আইন ও প্রশাসন থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা পায়নি এবং পাচ্ছে না। যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়িঘর ও ফ্ল্যাট করেছেন তারা সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে ঋণও পরিশোধ করতে পারছেন না। রাষ্ট্র তাদের সাহায্য করছে না। ন্যায়বিচারের জন্য তারা কোথায় যাবেন তা তারা জানেন না। এ ধরনের জবরদখল প্রচেষ্টার সর্বশেষ একটি নজির পাওয়া গেছে ঢাকার মতিঝিল থানার আরামবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেড-এর সাফ কবলামূলে ক্রয়কৃত তিনটি ভবনে হোল্ডিং নম্বর ৮৯ ও ৮৯/১-এ অবস্থিত গত আট-নয় বছর ধরে বাংলাদেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেড ভোগ দখল করে আসছে। বলা বাহুল্য, এই প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রার, জয়েন্ট স্টক কোম্পানীর অধীনে নিবন্ধিত একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী এবং এর শেয়ার হোল্ডারদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। প্রতিষ্ঠানটির উল্লেখিত ভবন ও জমির মালিকানার ব্যাপারে কোন বিরোধ নেই। কিন্তু, অভিযোগ অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নয় নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার জনাব মমিনুল হক সাইদের লোক পরিচয় দিয়ে গত জুন মাসে হঠাৎ করে ১৫/২০ জন যুবক শ্রেণীর লোক বিপিএল ভবনে এসে হামলা করে এবং কর্মচারীদের মারধর করে অফিসের খাতাপত্র ও কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তারা কর্মচারীদের কাছ থেকে তালা-চাবিও ছিনিয়ে নেয় এবং অফিস তালাবদ্ধ করে দেয়। একইভাবে তারা ভবনসমূহে ভাড়াটিয়া শূন্য পাঁচটি কক্ষ প্রথমে তালাবদ্ধ করে দেয় এবং পরে ভাড়াটিয়া হিসেবে নিজেদের লোক উঠিয়ে দেয়। তারা বিপিএল-এর নিরাপত্তা প্রহরীদের মারধর করে এবং কিছুসংখ্যক ভাড়াটিয়াও তাদের মারধরের শিকার হয়। এর ফলে বিপিএল-এর অংশীদারদের মধ্যে বিরাট ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। উল্লেখ্য যে, ওয়ার্ড কমিশনার পর্দার অন্তরালে থাকলেও বর্তমানে প্রকাশ্যে এ দখলদারিত্বের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন পত্রিকা ও জাতীয় দৈনিক "দৈনিক সংগ্রাম" বিপিএল-এর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়। অবৈধ দখলদারিত্ব প্রচেষ্টার এ বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রতিকার চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলেও জানা যায়; কিন্তু, তারা কোন সাহায্য পাননি। তাদের পেশ করা জিডির আবেদনও সংশ্লিষ্ট থানা নথিভুক্ত করেনি বলে জানা যায়। এর ফলে সরকার, সরকারি দল, সরকারি প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, 'বাংলাদেশ কি পুনরায় মগের মুল্লুকে পরিণত হচ্ছে? আইনানুগ নাগরিকরা কি তাদের জীবন, সম্পত্তি ও মান-সম্মান রক্ষায় সরকারের নিরাপত্তা পাবেন না? সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা কি অব্যাহতভাবে মানুষের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা বিঘিœত করতে থাকবে? আমার জানা মতে, যদি কোন সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে বিরোধ থাকে তাহলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে তার ফয়সালা করেন। কেউ জবরদস্তি করে কারোর বাড়ি দখল করতে পারেন না। এই দখল বেআইনী এবং তস্করদের কাজ। সরকার অথবা তার কোন অর্গান তস্করদের সহযোগিতায় বা পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারে না। এটা কোন সভ্য দেশের সভ্য সমাজের কাজ নয়। আমি আশা করব, সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টির ওপর নজর দেবেন এবং ইনসাফের নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস : প্রায় সাড়ে তিনশ বছর পর বাংলাদেশে মগের মুল্লুক ফিরে এসেছে বলে মনে হয়। তবে, ভিন্ন অবয়ব ও আঙ্গিকে এর সূচনা ঘটেছে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নামক একটি রাজনৈতিক দলের শাসন ক্ষমতা গ্রহণের সুযোগ নিয়ে। দলটি ক্ষমতায় আসার পর যে হারে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর অত্যাচার নিপীড়নের পাশাপাশি সরকারি- বেসরকারি সম্পত্তি লুণ্ঠন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জবরদখল, হত্যা, গুম, ব্যাংক ও অর্থ প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট, শেয়ার বাজারে মূলধন লোপাট, মেগা প্রকল্পের নামে অর্থ আত্মসাৎ, বিচার বিভাগীয় ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া ও প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অমানবিকভাবে হত্যা এবং হত্যাকা- ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কাজে এলিট ফোর্স র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বেআইনী ব্যবহার এবং তার অভিব্যক্তি হিসেবে যে হারে সমাজে আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে তা মগ-পর্তুগীজদের অত্যাচারকেও হার মানায়।
দেশের এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে শাসক দলের কিছুসংখ্যক মন্ত্রী-এমপি-আমলা ছাড়া আর কারোরই জীবন-মান-সম্ভ্রম ও সম্পত্তির কোন নিরাপত্তা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। ষোড়শ শতাব্দীতে যখন মগ ও পর্তুগীজ দস্যুরা অত্যাচার কাজে তৎপর ছিল তখন সরকার ছিল নিষ্ক্রিয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভয়ে ভীত ও সন্ত্রস্ত। তখন সরকারের কোন দল বা অঙ্গ-সংগঠন ছিল না। সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীও মানুষের অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ লুট করার কোন অভিযোগ শোনা যেত না। কিন্তু আধুনিক মগের মুল্লুকের অবস্থা ভিন্ন ও আরও ভয়াবহ। এখন সরকারের যেমন দল আছে তেমনি এই দলের অর্ধশতাধিক উপদল বা অঙ্গ-সংগঠন রয়েছে। যাদের চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি ও নির্যাতনে সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে বলে দেশব্যাপী দীর্ঘকাল ধরে অভিযোগ চলে আসছে। এদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে থানায় জিডি নেয়া হয় না। পুলিশ প্রশাসন সহানুভূতি দেখায় না। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার কর্ণপাত করেন না এবং বিচারিক আদালতে তাৎক্ষণিক বা মধ্যমেয়াদে কোন বিচার পাওয়া যায় না। এই এক আজব দেশ। একদিকে চরম দারিদ্র্য, ভিক্ষার সামগ্রী সংগ্রহ করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ডজন ডজন মানুষ, নারী ও শিশু মৃত্যুবরণ করে। অন্যদিকে চাঁদাবাজি, লুটপাট, জবরদখল ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে মন্ত্রী-এমপি, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ লীগ পরিবারের সদস্যরা অর্থ বিত্তের পাহাড় গড়ে। এই কাজে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সরকার সমর্থক মেয়র-কাউন্সিলররাও শরিক হবার অভিযোগ উঠেছে। এদের অনেকেই বিদেশে বেনামি অর্থ পাচার করে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম বানায়। সরকারি ব্যাংকগুলোকে এরা প্রায় দেউলিয়া করে ছেড়েছে। তাদের ব্যাংক একাউন্টসমূহ শুধু স্ফীত হয়নি অনেকে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে নামে-বেনামে জায়গা সম্পত্তি, ফ্ল্যাট-বাড়ি ও সোনা-দানার বিপুল মজুদ গড়ে তুলেছে। সরকার দলীয় এমপি, মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্য, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ গোটা লীগ পরিবারের নেতাকর্মীদের ব্যাংক হিসাব যদি নিরপেক্ষ কোন তদন্ত দল দিয়ে পরীক্ষা করানো হয় তাহলে সম্ভবত তাদের মধ্যে এমন একজনও পাওয়া যাবে না যার একাউন্টে অবৈধ ও অজ্ঞাত উৎসের অর্থ নেই। এই অর্থ শোষিত জনগণের। মগরা মানুষকে শোষণ করেছে লুণ্ঠন করেছে সত্য কিন্তু তার ব্যাপকতা আধুনিক মগদের তুলনায় খুবই নগণ্য।
সারা দেশে এর ভূরি ভূরি নজির রয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর বর্তমান ক্ষমতাসীন দল দেশ শাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল এবং দলটির নেতাকর্মীরা একদিকে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর হত্যা, গুম, হামলা, মামলা ও নির্যাতনের স্টীম রোলার চালিয়ে ইতিহাসের এক জঘন্যতম অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। বিহারী, অনিবাসী ও প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং পারিবারিক শত্রুদের সম্পত্তি জবর দখল করে তারা অর্থ-বিত্তের পাহাড়ও সৃষ্টি করেছিল। অবাঙ্গালিদের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ প্রায় ৫৫ হাজার বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকারখানা জবর দখল করে তারা হঠাৎ করে শিল্পপতি বনে গিয়েছিল। এছাড়াও তারা গ্রামগঞ্জে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুভিটা ও জায়গাজমি ছাড়া করে পথের ভিখারী বানিয়েছিল। মজলুম জননেতা মরহুম মওলানা ভাসানীর ভাষায় তারা দেশকে তখন একটি লুটপাট সমিতিতে রূপান্তর করেছিল। প্রথমত আঁতাতের নির্বাচনে প্রতিবেশী দেশের বস্তা বস্তা টাকা ও পেশী শক্তি বলে এবং পরবর্তীকালে ভোটারবিহীন নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে বিনা ভোটে 'জয়লাভ' করে সরকার গঠন করে তারা নতুন নতুন কায়দায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি, দুর্নীতি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। এটা করতে গিয়ে তারা গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সার্বজনীন মানবাধিকার এবং ইনসাফকে গলা টিপে হত্যা করেছে। নির্লজ্জ দলীয়করণের কবলে পড়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি অঙ্গ এখন ক্ষতবিক্ষত। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দলীয় দাসত্বের শৃঙ্খলে শৃঙ্খলিত। ক্ষমতাসীন দলটির দ্বিতীয় মেয়াদের শাসনামলে তাদের অনেকটা সংযত দেখা গেলেও তৃতীয় ও চতুর্থ মেয়াদে এসে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে মনে হয়। তারা একসাথে সকল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলকে নির্মূলের অভিযানে নেমেছে এবং শতকরা নব্বই ভাগ মানুষের ঈমান, আকীদা ও বিশ্বাসের ওপর যারা আঘাত হানছে তাদের পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকা পালন করছে। ১৯৯৬-২০০০ মেয়াদে সারা দেশে নগণ্যসংখ্যক সন্ত্রাসী-গডফাদারের অপকর্ম তাদের জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়েছিল। কিন্তু, তা থেকে তারা কোন শিক্ষা গ্রহণ করেছেন বলে মনে হয় না। বর্তমানে শুধু জেলা-উপজেলা নয় সারা দেশের ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে সন্ত্রাসী গডফাদাররা তাদের অপতৎপরতা চালাচ্ছে এবং অভিযোগ উঠেছে যে, এই দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের তারা চাঁদাবাজি-দখলবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। কেউ কেউ বলে থাকেন যে, তাদের অবৈধ অর্থের একটি অংশ তারা উপরের দিকেও ব্যয় করে থাকেন।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরসমূহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দল ও তার অঙ্গ-সংগঠনসমূহের প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা ব্যক্তি ও সামষ্টিক মালিকানাধীন হাজার হাজার বাড়িঘর, প্লট, ফ্ল্যাট জবরদখল করে রেখেছে। তারা ভাড়াটিয়াদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তাড়িয়ে দিয়ে নিজেরাই ভাড়াটিয়া বসিয়ে এগুলো ভোগ দখল করছে। বেচারা মালিকরা আইন ও প্রশাসন থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা পায়নি এবং পাচ্ছে না। যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়িঘর ও ফ্ল্যাট করেছেন তারা সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে ঋণও পরিশোধ করতে পারছেন না। রাষ্ট্র তাদের সাহায্য করছে না। ন্যায়বিচারের জন্য তারা কোথায় যাবেন তা তারা জানেন না। এ ধরনের জবরদখল প্রচেষ্টার সর্বশেষ একটি নজির পাওয়া গেছে ঢাকার মতিঝিল থানার আরামবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেড-এর সাফ কবলামূলে ক্রয়কৃত তিনটি ভবনে হোল্ডিং নম্বর ৮৯ ও ৮৯/১-এ অবস্থিত গত আট-নয় বছর ধরে বাংলাদেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেড ভোগ দখল করে আসছে। বলা বাহুল্য, এই প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রার, জয়েন্ট স্টক কোম্পানীর অধীনে নিবন্ধিত একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী এবং এর শেয়ার হোল্ডারদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। প্রতিষ্ঠানটির উল্লেখিত ভবন ও জমির মালিকানার ব্যাপারে কোন বিরোধ নেই। কিন্তু, অভিযোগ অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নয় নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার জনাব মমিনুল হক সাইদের লোক পরিচয় দিয়ে গত জুন মাসে হঠাৎ করে ১৫/২০ জন যুবক শ্রেণীর লোক বিপিএল ভবনে এসে হামলা করে এবং কর্মচারীদের মারধর করে অফিসের খাতাপত্র ও কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তারা কর্মচারীদের কাছ থেকে তালা-চাবিও ছিনিয়ে নেয় এবং অফিস তালাবদ্ধ করে দেয়। একইভাবে তারা ভবনসমূহে ভাড়াটিয়া শূন্য পাঁচটি কক্ষ প্রথমে তালাবদ্ধ করে দেয় এবং পরে ভাড়াটিয়া হিসেবে নিজেদের লোক উঠিয়ে দেয়। তারা বিপিএল-এর নিরাপত্তা প্রহরীদের মারধর করে এবং কিছুসংখ্যক ভাড়াটিয়াও তাদের মারধরের শিকার হয়। এর ফলে বিপিএল-এর অংশীদারদের মধ্যে বিরাট ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। উল্লেখ্য যে, ওয়ার্ড কমিশনার পর্দার অন্তরালে থাকলেও বর্তমানে প্রকাশ্যে এ দখলদারিত্বের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন পত্রিকা ও জাতীয় দৈনিক "দৈনিক সংগ্রাম" বিপিএল-এর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়। অবৈধ দখলদারিত্ব প্রচেষ্টার এ বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রতিকার চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলেও জানা যায়; কিন্তু, তারা কোন সাহায্য পাননি। তাদের পেশ করা জিডির আবেদনও সংশ্লিষ্ট থানা নথিভুক্ত করেনি বলে জানা যায়। এর ফলে সরকার, সরকারি দল, সরকারি প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, 'বাংলাদেশ কি পুনরায় মগের মুল্লুকে পরিণত হচ্ছে? আইনানুগ নাগরিকরা কি তাদের জীবন, সম্পত্তি ও মান-সম্মান রক্ষায় সরকারের নিরাপত্তা পাবেন না? সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা কি অব্যাহতভাবে মানুষের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা বিঘিœত করতে থাকবে? আমার জানা মতে, যদি কোন সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে বিরোধ থাকে তাহলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে তার ফয়সালা করেন। কেউ জবরদস্তি করে কারোর বাড়ি দখল করতে পারেন না। এই দখল বেআইনী এবং তস্করদের কাজ। সরকার অথবা তার কোন অর্গান তস্করদের সহযোগিতায় বা পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারে না। এটা কোন সভ্য দেশের সভ্য সমাজের কাজ নয়। আমি আশা করব, সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টির ওপর নজর দেবেন এবং ইনসাফের নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
Pl see my blogs;
Feel free -- and I request you -- to forward this newsletter to your lists and friends!
No comments:
Post a Comment